,

এবার ঢাবির সিনেট পদ থেকে অব্যাহতি নিলেন শোভন

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি নিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টায় শোভনের পক্ষে মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের নিকট পদত্যাগপত্র জমা দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এর দপ্তর সম্পাদক আহসান হাবিব, ছাত্রলীগ নেতা ফেরদৌস আল মাহমুদ পলাশ ও ডাকসু সদস্য রফিকুল ইসলাম সবুজ। দৈনিক অধিকারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেরদৌস আল মাহমুদ পলাশ।

ব্যক্তিগত সমস্যা থাকার কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন।

পদত্যাগপত্রে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা বলেন, “যথাযথ সম্মান প্রদর্শন পূর্বক উপযুক্ত বিষয়ের বরাতে আপনাকে জানাচ্ছি যে, আমি মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। বর্তমানে আমার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন সম্ভব নয়। এমতাবস্থায় আমি উক্ত পদ থেকে পদত্যাগ করতে আগ্রহী।

অতএব, আপনার নিকট বিনীত নিবেদন আমার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করে আমার ওপর অর্পিত সিনেট সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দানে বাধিত করবেন।”

শোভনের পদত্যাগপত্র

এর আগে চাঁদাবাজিসহ বিতর্কিত নানা কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি পদ থেকে অপসারণ করা হয় শোভনকে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর হাতে পদত্যাগ পত্র তুলে দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এরপর থেকে শুরু হয় নানা আলোচনা সমালোচনা। বেরিয়ে আসতে থাকে নানা অভিযোগ।

এর মধ্যেই রবিবার সন্ধ্যায় শোভনের বাবা কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী চৌধুরী দাবি করেন, শোভন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।

শোভনের বাবা বলেন, আমি আমার ছেলেকে (রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন) চিনি। সে কোনোভাবেই এ ধরনের কাজ করতে পারে না। আমার ছেলে আগে থেকেই সহজ-সরল। আমার ছেলে শোভন এ রকম খারাপ ছিল না। ও সাদাসিধে এবং অত্যন্ত সরল প্রকৃতির ছিল। এ কারণেই তাকে একটি চক্রের বলির পাঠা হতে হলো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। তার প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। তিনি নিজেই শোভনকে পছন্দ করে ছাত্রলীগের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। নেত্রী এখন মনে করছেন যে এদের দিয়ে আর ভালো চলবে না, তাই তাদের পদত্যাগ করতে বলেছেন। তার সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উন্নয়ন প্রকল্প থেকে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের কাছে অর্থ দাবি প্রসঙ্গে শোভনের বাবা বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করে জানতে পেরেছি, জাবির ব্যাপারে আসলে শোভন কিছুই জানে না। ঘটনাস্থলে ওইদিন শোভন ছিল না। সেখানে তাকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যেন সেখানকার পরিস্থিতি ঠিক হয়। রাব্বানীরা তাকে পরে ডেকে নিয়ে যায়। শোভন উদ্ভূত পরিস্থিতি মীমাংসার জন্য সরল বিশ্বাসে সেখানে গিয়েছিল। অথচ অর্থ কেলেঙ্কারিতে তাকে ফাঁসানো হলো। আমার ছেলেকে নিয়ে যে আর্থিক বিষয়গুলো বলা হচ্ছে, সেটা তার দ্বারা সম্ভব নয়। সে পরিস্থিতির শিকার, আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।

তিনি আরও বলেন, জাবি ভিসির সঙ্গে কথা বলার সময় গোলাম রাব্বানী যেহেতু একটি প্রস্তাব দিয়েছিল, সেখানে শোভন উপস্থিত থাকায় হয়তো তার নামও এসেছে। কিন্তু রাব্বানী নিজেই বলেছে, শোভন কিছু জানে না। এমনটাই বলেন শোভনের বাবা।

আওয়ামী ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হিসেবে এ বিষয়টির কারণে আওয়ামী লীগের প্রতি আমাদের সামান্যতম শ্রদ্ধা কমবে না বলেও জানান নূরুন্নবী চৌধুরী।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর